🌿 আমার জীবনের গল্প 🌿
আমি আমার বাবা মায়ের চতুর্থ কন্যা। বাবার অনেক আদরের সন্তান আমরা।
🌿আমার জন্ম🌿
ঢাকা জেলার জুরাইন আমার জন্ম। আমরা ৫বোন ১ভাই।
🌿 আমার ছোটবেলা🌿
আমার ছোটবেলা অনেক মজার ছিল।খেতে খুব ভালো বাসতাম। বাড়িতে যারাই আসতো সবাই বলতো আমি অনেক লক্ষী মেয়ে। খুব সুন্দর করে আস্তে আস্তে কথা বলি। খুব লজ্জা পেতাম কারো সামনে যেতে।বাবা মায়ের ইচ্ছা ছিলো আমি একজন আইনজীবী হবো।এই ইচ্ছে নিয়ে বড় হতে থাকি।
🌿 মজার সময়🌿
আমি বেশি মজা করতাম আমার নানা ভাইয়ের সাথে।নানা কে অনেক ঝালিয়েছি।নানার সামনে নাচলে নানা লাঠি নিয়ে দৌড় দিতো।কখনো তার লাঠি,চশমা,টচ লাইট লুকিয়ে রাখতাম।
একদিন রাতে নানা কে ভূতের ভয় দেখাতে গিয়ে নিজেই ভয় চিৎকার দিয়েছি 😃😃।ফুটবল, ক্রিকেট, কানামাছি,বৌ ছি অনেক খেলাধুলা করতাম আমি।
🌿 শিক্ষা জীবন 🌿
স্কুল জীবন
আমি ক্লাস ওয়ান থেকে এস,এস,সি পর্যন্ত এক স্কুলে পড়েছি। সবসময় রোল ১/২ থাকতো।৫ম শ্রেনিতে উঠার পর রোল ৩চলে আসলো।কারন কমিটির লোকের মেয়েকে ১রোল দিতো। স্কুলের সকল স্যার মেডাম আমাকে অনেক বেশি আদর করতো। এখনো সবাই আমাকে দেখলে মা বলে ডাকে।
আমি যখন ক্লাস ৬ষ্ঠ শ্রেনিতে পড়ি তখন ফাইনাল পরীক্ষায় লিখার সময় হঠাৎ আমার মাথায় উপর থেকে ফ্যান পড়ে যায়। আমি অঙ্গান হয়ে পড়ি । মজার বিষয় আমার মাথায় কোথাও ফেটে যায়নি। কিছু ক্ষন পর আমার জ্ঞান আসে। সবাই বলছে পরীক্ষা দেয়া লাগবে না। কিন্তু আমি কোনো কথাই শুনি নাই।প্রধান শিক্ষকের রুমে বসে পরীক্ষা দিলাম।রোল হলো ২।
🌿কলেজ জীবন 🌿
আমি অনেক শান্ত ছিলাম। বাবা মা সবসময় টেনশন করতো কোথায় ভর্তি করাবে আমাকে। কোন জায়গায় চিনিনা।বাসে চলাচল করতে পারিনা। দূরে কোথায় ভর্তি করাবে যেতে ও পারিনা। বাড়ির কাছে এক কলেজে ভর্তি হলাম। কলেজ টি ছিলো মহিলা কলেজ। অনেক বেশি প্রেসারে রাখতো।পুড়ো কলেজ লাইফ চুলে এক বেনি করে কাটিয়েছি।
🌿 বিশ্ববিদ্যালয় জীবন🌿
আমি ঢাকা সিটি কলেজে ফিন্যান্স সাবজেক্ট সুযোগ পাওয়ার পর ভর্তি হই।একা একা এতো দূরের পথ প্রথম প্রথম ভালো লাগতো না। তাছাড়া ছোট বেলার ইচ্ছা আইনজীবী হওয়া কিন্তু ভর্তি হলাম ফিন্যান্স। একদিন ক্লাস টিচার একটি মেয়েকে কানে ধরে দাঁড় করিয়ে রাখলো।তারপর আর যায়নি।
বাবা তার ইচ্ছা মতো আবার ভর্তি করলো ধানমন্ডি ইষ্টান ইউনিভার্সিটিতে।LLB পড়ানোর জন্য। কোনো রকম না পড়ার মতো ৪ সেমিস্টার পাড় করি ।কারন ঐ সময় বাবা অনেক অসুস্থ। বাবাকে হসপিটাল থাকতে হতো।পড়াটা বন্ধ হয়ে যায়।
পরবর্তী তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজে ভর্তি হই। এখনো সেশনজট এ পড়ে আছি।
🌿কষ্টের জীবন 🌿
ছোট বেলায় অনেক বিলাসীতা মাঝে বড় হয়েছি। টাকার কোনো অভাব ছিলো না আমাদের। বাবা ১০০টাকা চাইলে ২০০টাকা দিতো।প্রতি সপ্তাহে শপিং করতাম।আস্তে আস্তে আমাদের পড়াশোনা খরচ বাড়তে থাকে। সবাই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় পড়ি। তাছাড়া বাবা ও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বড় কোনো ভাই নাই।কে দেখবে বাবার বিজনেস।লোস হতে থাকে। আপুদের সেমিস্টার ফি আমার ফি পাশাপাশি সময় পড়ে যেতো।বাবা এতো টাকা জোগাড় করতে গিয়ে হিমশিম খেতো।আস্তে আস্তে বাবা বিছানায় পড়ে যায়। আমার মনে ইচ্ছা জাগলো ছোট হলেও একটা চাকরি আমাকে করতে হবে।অত্যন্ত অভিজ্ঞতার জন্য । বাবাকে না জানিয়ে নিজ এলাকায় একটি প্রাইমারি স্কুলে ১৫০০টাকা বেতনে চাকরি নেই। কিছু দিন পড় চাকরি ছেড়ে দিতে হয়। বাবাকে হসপিটাল থাকতে হতো তাই।তার হাড় কিডনি সব কিছু সমস্যা। বাবার কমরের হাড়ের জোড়া ছুটে যায়।আর কোনো দিন বসতে পারে না। তারপর কিডনি অপারেশন হয়।আরো অসুস্থ হয়ে পড়ে। বাবা সবসময় বলতো আমি কি আর হাঁটতে পারবোনা? অবশেষে একদিন বাবা মারা যায়। 😢😢😢😢 পড়ে থাকে আমার, বাবার, মায়ের স্বপ্ন।
পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ নেই। বাবার চিকিৎসা লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ হয়।মা ছেলে দেখে বিয়ে দিয়ে দেয়।
🌿বিবাহিত জীবন 🌿
আল্লাহর কাছে লক্ষ লক্ষ শুকরিয়া আমাকে অনেক ভালো একজন স্বামী দিয়েছে। আমার একটি পুত্র সন্তান হয়।ওর দেড় মাস বয়সে জানতে পারি হার্টে ছিদ্র আছে। অনেক কান্না করি। আল্লাহ বাবা কে নিয়ে গেলো। এখন আমার এতটুকু ছেলে হাঁটে ছিদ্র। কিভাবে ও এতো কষ্ট সহ্য করবে। এখন ওর বয়স ২২মাস।
🌿আমার স্বপ্ন🌿
মনের ভিতর সবসময় কাজ করতো নিজে কিছু একটা করবো। চাকরি করতে আমার কখনো মন চাইতো না। ভাবলাম ছেলে অসুস্থ।এতো ছোট বাচ্চা কে নিয়ে কি কাজ করা যায়। তারপর অনলাইন বিজনেস সম্পর্কে জানতে পারি।সাহস করে মেয়েদের থ্রিপিস নিয়ে কাজ শুরু করে দেই। কিন্তু ছেলের জন্য লেগে থাকতে পারিনি। অফলাইন কিছু সেল করি।
এখন নতুন করে আবার অনলাইন চেষ্টা করছি।
,🌿ঘুড়ে দাঁড়ানোর গল্প 🌿
আমি আবার নতুন করে আমার কাজকে ভালোবেসে শুরু করেছি।"নিজের বলার মতো গল্প"পরিবার থেকে অনেক কিছু শিখছি।
🌿 সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি যাতে একজন ভালো মানুষ হয়ে বাঁচতে পারি। একজন সফল উদ্যোক্তা হতে পারি।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৬০৩
Date:- ২২/০৮/২০২১
মুন্নী আক্তার
ঢাকা জুরাইন থেকে
কাজ করছি মেয়েদের থ্রিপিস নিয়ে
ব্যাচ ১৩
রেজিস্ট্রেশন নং ৫৯৩৯২
পেজ: https://www.facebook.com/MahirFashionHouse/
 
                       ইনশাআল্লাহ ফরিদপুর জেলার বাকি ৮টি উপজেলায় এই কর্মসূচি চলমান থাকবে। অনেক বেশি ধন্যবাদ Iqbal Bahar Zahid স্যার কে ॥
আমি রান্নাটা ভালো পারি, রান্নাটা নিয়েই পেজ খুলি অনলাইনে কাজ করি। প্রথম অর্ডার আসছিল পিৎজা ডেলিভারির। আলহামদুলিল্লাহ তারপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ।